প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য টিপস

আমরা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য টিপস মেনে চলি। সাধারণত আমরা প্রতিনিয়ত এই  নিয়ে চিন্তা করি যে কিভাবে ওজন কমবে, কিভাবে রাতে ঘুম ভাল হবে, কিভাবে বেশি শক্তি পাওয়া যাবে, কি পরিমান পানি পান করা দরকার এইসব অনেক প্রশ্নের উত্তর আমরা রোজ নতুন করে জেনে নিতে পছন্দ করি ।


অন্যদিকে এমন কিছু প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য  টিপস আছে যা আমাদের মোটেই পছন্দ হয় না। এই কারণ বসতো তা আমরা মেনে চলতে চাই না। কিন্তু যত পছন্দই না হউক প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য  টিপস গুলো কিন্তু এতে অনেক উপকারিতা রয়েছে। তাই নিম্নে জেনে নিন এমন প্রয়োজনীয় ৯টি স্বাস্থ্য টিপস। যা আপনার সুস্বাস্থ্যর জন্য অধিক প্রয়োজনীয়।

স্বাস্থ্য ভালো করার উপায়

সব মানুষের কাম্য কি ভাবে সুস্থ, সুন্দর ও ফিট শরীর রাখা যায়। তবে প্রায় সময়ে দেখা যায় প্রতিদিন যে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য টিপস গুলো মেনে চলা দরকার তা নিজেদের অলসতা বা ইচ্ছার অভাবে করা হয় না। স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য টিপস গুলো মেনে চলুন।



প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য টিপস

  • ক্লান্ত অবস্থায় শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করুন:

বাইরে সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বাসায় ফিরে আবার ব্যায়াম করুন? আপনি কি এই ভাবছেন, যে আপনি আরও বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন! কিন্তু তা না। বরং উল্টো ফলাফল পাবেন। ব্যায়াম বরং আপনাকে আরো বেশি তরতাজা করে তুলবে, মনকে প্রফুল্ল রাখাবে, এতে আপনি সারাদিনের হারিয়ে যাওয়া শক্তি ফিরে আনবে। এমনকি দূর করে দেয় খারাপ ভাবনা! বিশ্বাস যদি না হলে আজ থেকে নিজেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এর বিশেষ সুফল।
  • মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে হাতে লিখুন:

আমরা এখন সাধারণত লেখালেখির সব ধরণের কাজ কম্পিউটার দ্বারা করে অভ্যস্ত হয়ে থাকি। কিন্তু এক বিশেষ গবেষণায় দেখা যায় যে,সবচেয়ে কার্যকরী হয়, কোন কিছু মনে রাখতে চাইলে তা  হাতে লিখে মনে রাখার চেষ্টা করা।এর মাধমে আপনার মস্তিষ্ক আরো বেশি সজাগ থাকে বলে জানা যায়। মনে করে দেখুনতো ছোটবেলায় আমরা কিন্তু এভাবেই পড়াগুলো মুখস্থ করতাম! এখন থেকেই যখন যা কিছু শিখবেন,সবসময় কম্পিউটারে টাইপ না করে মনে রাখতে চাইলে তা কাগজে কলমে লিখে দেখুন, বেশি মনে থাকবে। এটি এক দিকে যেমন আপনার হাতের লেখা ভালো হবে অন্য দিকে আপনাকে মনে রাখার বিশেষ সয়তা করে থাকবে।
  • সম্পর্ককে ভাল রাখার জন্য একসঙ্গে কম সময় কাটান:

আপনি সবসময় একই সঙ্গে সময় কাটানো, সব জায়গায় একই সঙ্গে  যাওয়া, একসাথে কোথাও বেড়ানোতেই যে আপনার সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তা কিন্তু নয়। বরং এতে আরও আপনার ব্যক্তি  হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এর ফলে আপনার মধ্যে হতাশা, অস্তিত্বের সংকট ইত্যাদি তৈরি হতে পারে। অন্য দিকে আপনার সঙ্গীকে এভাবে বুঝতেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। সবচেযে ভালো হয় বরং কিছু সময় একা থাকুন, নিজেকে সময় দেবার চেষ্টা করুন।
  • ওজন কমাতে ডায়েট কার্বোনেটেড বেভারেজ বা মিষ্টি বিহীন পানীয় খাবেন না:

আপনি ওজন কামাতে ডায়েট কোকাকোলা, পেপসি বেছে নিতে পারেন।এক বিশেষ গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা ডায়েট সোডা পান করেন থাকেন তারা বরং আরও অনেক বেশি মাত্রায় ক্যালরি গ্রহণ করে থাকেন। আরো একটি ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের গবেষণায় দেখা যায় যে,যারা ডায়েট সোডা পান করে থাকেন তাদের কোমর ১০ বছরে ৭০ শতাংশ বেশি স্থূল হয় থাকে, যারা ডায়েট সোডা পান করেন না তাদের তুলনায় অনেক বেশি। তাই আপনি নিয়মিত ডায়েট কার্বোনেটেড বেভারেজ বা মিষ্টি বিহীন পানীয় পান করুন, এতে যেমন ক্লান্তি দূর হয় তেমনি আপনার কমের বিশেষ উপকারিতা রয়েছে।
  • গরমের দিনে গরম খান, ঠাণ্ডা নয়:

গ্রীষ্মের এক সকালে কী খেয়ে থাকেন আপনি, গরম না শীতল ঠাণ্ডা এক মগ কফি অথবা এক কাপ চা তাই না ? অবশ্যই ঠাণ্ডা কফি বা চা ! আপনি সাধারণ এই ধরণের ভুল করে থাকেন! আপনি জানেন কি এতে বরং ঠাণ্ডা লেগে যাওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে। গবেষণায় দেখা যায় যে, গরমের সময় গরম খাবারি আপনাকে বরং ঠাণ্ডা রাখে। কারণ, গরমের দিনে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে ঘামেরে সৃষ্টি হয়, আর ঘাম হওয়া কিন্তু শরীরের জন্য বিশেষ জরুরি!
  • ক্লান্তিকর সময় এনার্জি ড্রিংক্স নয়:

আপনি জানেন কি ? এনার্জি ড্রিংক্স কফির তুলনায় সাধারণত ৬ গুণ বেশি ক্যাফেইন সমৃদ্ধ একটি পানীয়। কিন্তু এনার্জি ড্রিংক্স স্বল্প সময়ে জন্য এনার্জি তৈরি করে থাকে, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। এতে উপকারের চেয়ে আপনাকে নার্ভাস করে দেয়, এতে আপনার পালস বেড়ে যায়। ফলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া গেলেও পড়ে  আপনাকে আরো বেশি দুর্বল করে দেয় এবং দ্রুতই ঘুম পায়, গা ছেড়ে দিয়ে থাকে। যা শরীরের জন্য উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমান বেশি হয়ে থাকে।
  • ছোট কাপড়ে ফিট হতে ওজন বাড়ান:

ছোট কাপড় সাধারণত নির্ভর করে শরিরের মাংসপেশির ধরনের উপর। আপনি যখন নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তখন ওজন কম হয় না বরং বেড়ে যায়। তাই আপনি অনায়াসেই  আপনার আগের ব্যবহারকৃত পছন্দের কাপড়গুলো পরিধান করতে পারেন। আপনি কি জানেন কেন হয় এটা? কারণ ব্যায়াম আপনার বাড়তি মেদ কমিয়ে থাকে। সাধারণত মেদহীন পেশি কম জায়গা নিয়ে থাকে, তার ফলে ওজন বাড়লেও পুরাতন কাপড় পরা যায় খুব সহজেই।
  • কম খেতে হলে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খান:

আমরা অনেক সময় দেখা যায় যে কম কার্বোহাইড্রেট খেতে গিয়ে আমরা এতই কম খেয়ে ফেলি যে ক্ষুধা লাগে কিছুক্ষণ পরপর। আপনি ভাবছেন কী খাবেন তাহলে? বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে আপনি প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন ধরুন বাদাম ও পনির এই জাতীয় খাবার খেতে পারেন। আপনি কিছু ভাবছেন যে এগুলোতে তো প্রচুর ফ্যাট থাকে তাই না। তবে তবে এই জাতীয় খাবার অনেক সময় ধরে আপনাকে ক্ষুধার অনুভূতি থেকে বিরত রাখবে। এতে আপনার দ্রুত ক্ষুধার অনুভূতি কাটবে এমনকি ভারী খাবার না খেয়েও অনেক সময় কাটাতে পারবেন।আপনার এক দিকে যেমন সময় বাঁচবে ও তেমনি ভারী খাবারের চাহিদা কম হবে।
  • খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করবেন না:

আপনি সাধারণত সুস্থ্ দাঁত রাখার জন্য দাঁত ব্রাশ অবশ্যই করেন। কিন্তু আপনাকে  খাওয়ার একদম পরেই যে দাঁত ব্রাশ করবেন তা নয়। আপনার বরং এতে ক্ষতি  হতে পারে কারণ  টুথপেস্টের মধ্যে যে রাসায়নিক থাকে তা আপনার খাদ্যেরউপাদানের  সাথে বিক্রিয়ায় দাঁতের ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই আপনি রাতের খাবার খাওয়ার পর কিছু সময় অপেক্ষা করুন। এই সময়ে একটু পায়চারি করলে দোষের কিছু নেই। পায়চারি করা হলো এক ধরণের ব্যায়াম।

১৫ টি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য টিপস

১) আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে নিয়মিত প্রতিদিন ১৫ গ্রাম করে মৌরি চিবিয়ে খান। এতে করে দেখা যাবে খুব কম সময়ে রক্ত শুদ্ধ হয়ে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হতে শুরু করছে।

২) হাত পায়ের সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখতে চাইলে হাতে ও পায়ে নিয়মিত আপেলের খোসা ঘষে নিন। এতে করে আগের থেকে হাত ও পা অনেক বেশী ফর্সা দেখাবে এবং কালো দাগগুলো দূর হবে খুব সহজে।

৩) আপনার স্ট্রোক প্রতিরোধ নিয়মিত চা খান। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত চা খেলে আমাদের ধমনীর গাত্রে ফ্যাট জমতে পারে না। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে আসে অনেকখানি।

৪) আপনার শরীরকে অতিরক্ত শুষ্কতা থেকে মুক্তি পেতে মধু, দুধ ও বেসনের পেষ্ট মুখে লাগান নিয়মিত। এতে করে আপনার ত্বকের বলিরেখা ও দূর হয়ে যাবে।

৫) আপনার ঠোটেঁ কালো ছোপ পড়লে কাঁচা দুধে তুলো ভিজিয়ে ঠোটেঁ মুছবেন। এটি যদি নিয়মিত করেন তাহলে ঠোটেঁর কালো দাগ অনেকাংশে উঠে যাবে।

৬) টমেটোর রস ও দুধ একসঙ্গ মিশিয়ে কিছু সময় যদি মুখে লাগিয়ে রাখলে রোদে জ্বলা ভাব অনেকাংশে কমে যাবে।

৭) আমাদের সকলের পরিচিত মধু নানাগুণের অধিকারী । আমাদের শরীরে অসাড়তা, গলাব্যথা, রক্তস্বল্পতা, অস্টিও পোরেসিস, মানসিক চাপ, মাইগ্রেনসহ নানা শারীরিক সমস্যায় মধু বিশেষভাবে কার্যকর।

৮) আপনার কনুইতে কালো ছাপ দূর করতে চাইলে এখন থেকে নিয়মিত লেবুর খোসায় টিনি দিয়ে ভালো করে ঘষে নিন। এটা নিয়মিত কিছু দিন করুন অন্তত ২ সপ্তাহ। এতে আপনার কনুইতে দাগ চলে গিয়ে কনুই নরম হবে।

৯) মুখ আমাদের পরিচয় বহন করে। এই সুন্দর মুখ যদি ব্রনে পরিপূর্ণ থাকে তাহলে আপনার সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনি নিয়মিত রসুনের কোয়া ঘষে নিন ব্রণের উপর। ব্রণ তাড়াতাড়ি হারিয়ে যাবে আপনার মুখ থেকে।

১০) আপনার শরীরে লিগমেন্টেশন বা কালো দাগ থেকে চিরতরে মু্ক্তি পেতে আলু, লেবু ও শসার রস এক সঙ্গে মিশ্রিত করে তাতে আধ চা চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে শরীরের যে অংশে দাগ পড়েছে সেখানকার ত্বকে লাগান। খুব ভাল ফলাফল পাবেন।

১১) যদি মাথাব্যাথার সমস্যা প্রবল আকার ধারণ করে তাহলে এই সমস্যা দূর করতে নিয়মিত প্রচুর মাছ খান। কেননা মাছের তেল মাথাব্যথা প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া আরও খেতে পারেন আদা। কেননা আদা প্রদাহ এবং ব্যথা নিরাময়ে বিশেষভাবে কার্যকর।

১২) আপনার চুল পড়া বন্ধ করতে নিয়মিত মাথায় আমলা, শিকাকাই যুক্ত তেল লাগাতে পারেন। আর পায়ের গোড়ালি খুব বেশি ফাটলে পেঁয়াজ বেটে প্রলেপ দিন ফাটা জায়গায়। একটা সময় গোড়ালি ফাটা বন্ধ হয়ে যাবে।

১৩) সাধারণত তৈলাক্ত ত্বকে ঘাম জমে মুখ কালো দেখায়। এক্ষেত্রে আপনি একটা কাজ করতে পারেন ওটমিল ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশ্রিত করে মুখে লাগিয়ে রাখবেন আধা ঘন্টা বা তার একটু বেশি সময়। তারপর ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। যাদের হাত খুব ঘামে তারা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কিছুদিন লাউয়ের খোসা হাতে লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ করে। তারপর দেখবেন আর হাত ঘামবে না।

১৪) আপনার পিঠের অনেক পুরানো কালো ছোপ তুলতে ময়দা ও দুধ এক সঙ্গে মিশিয়ে পিঠে দশ মিনিট ধরে ঘষবেন, নিয়মিত ২ সপ্তাহ এটা করতে পারেন। নিয়মিত এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে পিঠের ছোপ উঠে যায়।

১৫) আপনার মুখে যদি বাদামী দাগ থাকে তাহলে বাদামী দাগ উঠাতে পাকা পেঁপে চটকে মুখে লাগান কিছু সমউ রেখে দিন, পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

No comments:

Post a Comment